Friday, 18 April 2025

শব্দের শ্রেণিবিভাগ – তৎসম, তদ্ভব, দেশজ ও বিদেশি

শব্দের শ্রেণিবিভাগ – তৎসম, তদ্ভব, দেশজ ও বিদেশি

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দগুলো উৎস অনুসারে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যায়। শব্দের উৎপত্তি এবং রূপান্তরের ভিত্তিতে শব্দকে তৎসম, তদ্ভব, দেশজবিদেশি শব্দে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

১. তৎসম শব্দ:

যেসব শব্দ সরাসরি সংস্কৃত ভাষা থেকে অপরিবর্তিতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোকে তৎসম শব্দ বলা হয়। এই শব্দগুলো সাধারণত কঠিন এবং সাহিত্যিক ভাষায় বেশি ব্যবহৃত হয়।

উদাহরণ: কর, গমন, বিদ্যা, বিদ্যালয়, জল, পুরুষ, মুখ

২. তদ্ভব শব্দ:

যেসব শব্দ সংস্কৃত শব্দ থেকে সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়ে সহজ ও প্রচলিত রূপে রূপান্তরিত হয়েছে, সেগুলোকে তদ্ভব শব্দ বলা হয়।

উদাহরণ: কান (কর্ণ), বাটি (পাত্রী), ছেলে (শিশু), গরু (গোষু), নাম (নামা)

৩. দেশজ শব্দ:

যেসব শব্দ বাংলা ভাষার নিজস্ব এবং কোনো সংস্কৃত উৎস থেকে আসেনি, সেগুলোকে দেশজ শব্দ বলা হয়। এদের উৎপত্তি স্থানীয় জনভাষা থেকে।

উদাহরণ: হাঁস, মাটি, খোকা, বউ, ডাল, ঝিনুক, কুপি

৪. বিদেশি শব্দ:

যেসব শব্দ বাংলা ভাষার বাইরের ভাষা যেমন—আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি থেকে এসেছে, সেগুলোকে বিদেশি শব্দ বলা হয়।

উদাহরণ: কিতাব (আরবি), তালাক (আরবি), খিদমত (ফারসি), টেবিল (ইংরেজি), অফিস, গাড়ি, স্কুল

তালিকা আকারে শ্রেণিবিভাগ:

ধরন সংজ্ঞা উদাহরণ
তৎসম সংস্কৃত থেকে সরাসরি গৃহীত বিদ্যা, কর, পুরুষ
তদ্ভব সংস্কৃত থেকে রূপান্তরিত কান, ছেলে, বাটি
দেশজ বাংলার নিজস্ব শব্দ হাঁস, বউ, খোকা
বিদেশি বহিরাগত ভাষা থেকে আগত কিতাব, স্কুল, অফিস

উপসংহার:

বাংলা ভাষা তার শব্দভাণ্ডারে বিভিন্ন উৎস থেকে শব্দ গ্রহণ করেছে। এ কারণে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। তৎসম, তদ্ভব, দেশজ ও বিদেশি শব্দগুলোর সঠিক ব্যবহার শেখা বাংলা ব্যাকরণে দক্ষতা অর্জনের জন্য জরুরি।

এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না!

No comments:

Post a Comment