শব্দের শ্রেণিবিভাগ – তৎসম, তদ্ভব, দেশজ ও বিদেশি
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দগুলো উৎস অনুসারে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যায়। শব্দের উৎপত্তি এবং রূপান্তরের ভিত্তিতে শব্দকে তৎসম, তদ্ভব, দেশজ ও বিদেশি শব্দে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
১. তৎসম শব্দ:
যেসব শব্দ সরাসরি সংস্কৃত ভাষা থেকে অপরিবর্তিতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোকে তৎসম শব্দ বলা হয়। এই শব্দগুলো সাধারণত কঠিন এবং সাহিত্যিক ভাষায় বেশি ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ: কর, গমন, বিদ্যা, বিদ্যালয়, জল, পুরুষ, মুখ
২. তদ্ভব শব্দ:
যেসব শব্দ সংস্কৃত শব্দ থেকে সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়ে সহজ ও প্রচলিত রূপে রূপান্তরিত হয়েছে, সেগুলোকে তদ্ভব শব্দ বলা হয়।
উদাহরণ: কান (কর্ণ), বাটি (পাত্রী), ছেলে (শিশু), গরু (গোষু), নাম (নামা)
৩. দেশজ শব্দ:
যেসব শব্দ বাংলা ভাষার নিজস্ব এবং কোনো সংস্কৃত উৎস থেকে আসেনি, সেগুলোকে দেশজ শব্দ বলা হয়। এদের উৎপত্তি স্থানীয় জনভাষা থেকে।
উদাহরণ: হাঁস, মাটি, খোকা, বউ, ডাল, ঝিনুক, কুপি
৪. বিদেশি শব্দ:
যেসব শব্দ বাংলা ভাষার বাইরের ভাষা যেমন—আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি থেকে এসেছে, সেগুলোকে বিদেশি শব্দ বলা হয়।
উদাহরণ: কিতাব (আরবি), তালাক (আরবি), খিদমত (ফারসি), টেবিল (ইংরেজি), অফিস, গাড়ি, স্কুল
তালিকা আকারে শ্রেণিবিভাগ:
ধরন | সংজ্ঞা | উদাহরণ |
---|---|---|
তৎসম | সংস্কৃত থেকে সরাসরি গৃহীত | বিদ্যা, কর, পুরুষ |
তদ্ভব | সংস্কৃত থেকে রূপান্তরিত | কান, ছেলে, বাটি |
দেশজ | বাংলার নিজস্ব শব্দ | হাঁস, বউ, খোকা |
বিদেশি | বহিরাগত ভাষা থেকে আগত | কিতাব, স্কুল, অফিস |
উপসংহার:
বাংলা ভাষা তার শব্দভাণ্ডারে বিভিন্ন উৎস থেকে শব্দ গ্রহণ করেছে। এ কারণে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। তৎসম, তদ্ভব, দেশজ ও বিদেশি শব্দগুলোর সঠিক ব্যবহার শেখা বাংলা ব্যাকরণে দক্ষতা অর্জনের জন্য জরুরি।
এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না!
No comments:
Post a Comment