Thursday, 17 April 2025

শতকরা (%) – ধারণা, সূত্র ও উদাহরণ

শতকরা (%) – ধারণা, সূত্র ও উদাহরণ

শতকরা: কোনো সংখ্যার প্রতি ১০০ অংশের মধ্যে কত অংশ রয়েছে তা বোঝাতে 'শতকরা' বা '%' ব্যবহার করা হয়। এটি 'percent' শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ “per hundred”।

প্রতীক: %


শতকরা হিসাবের সাধারণ সূত্র:

  • শতকরা মান = (অংশ × ১০০) ÷ মোট মান
  • অংশ = (শতকরা × মোট মান) ÷ ১০০
  • মোট মান = (অংশ × ১০০) ÷ শতকরা

উদাহরণ ১:

একটি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরের মধ্যে ৬০ পেয়েছে। শতকরা কত?

⇒ (৬০ × ১০০) ÷ ৮০ = ৭৫%

উদাহরণ ২:

একটি পণ্যের দাম ১০% বাড়ানো হলে, নতুন দাম কত হবে যদি পুরোনো দাম ২০০ টাকা হয়?

⇒ ১০% of ২০০ = (১০ × ২০০) ÷ ১০০ = ২০ টাকা

⇒ নতুন দাম = ২০০ + ২০ = ২২০ টাকা


শতকরা পরিবর্তন:

  • বৃদ্ধি = (বৃদ্ধি হওয়া অংশ × ১০০) ÷ পূর্বের মান
  • হ্রাস = (হ্রাস পাওয়া অংশ × ১০০) ÷ পূর্বের মান

উদাহরণ ৩:

একটি মোবাইলের দাম ১৫০০০ টাকা থেকে কমে ১৩০০০ টাকা হয়েছে। শতকরা হ্রাস কত?

⇒ হ্রাস = ১৫০০০ − ১৩০০০ = ২০০০

⇒ শতকরা হ্রাস = (২০০০ × ১০০) ÷ ১৫০০০ = ১৩.৩৩%


বাস্তব জীবনে শতকরা ব্যবহার:

  • ছাড় বা ডিসকাউন্ট হিসাব করতে
  • ব্যাংকের সুদ গণনায়
  • জনসংখ্যা বৃদ্ধি/হ্রাস নির্ধারণে
  • পানি, বিদ্যুৎ, কর ইত্যাদির হারে

উপসংহার:

শতকরা একটি মৌলিক ধারণা যা দৈনন্দিন জীবন, ব্যবসা, ও পরীক্ষায় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাটি ভালোভাবে আয়ত্তে আনলে সুদ, লাভ-ক্ষতি, ছাড়, পরিসংখ্যানসহ অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে।

বৃত্তের ক্ষেত্রফল ও পরিধির সূত্র

পাই (π) ও বৃত্ত – সূত্র, চিত্র ও বাস্তব প্রয়োগ

বৃত্ত (Circle): একটি স্থির বিন্দুকে কেন্দ্র ধরে সমদূরত্বে থাকা সকল বিন্দুর সংযোগ দ্বারা গঠিত বদ্ধ বক্ররেখাকে বৃত্ত বলে।

বৃত্তের প্রধান অংশ:

  • কেন্দ্র: বৃত্তের ঠিক মাঝখানের বিন্দু
  • ত্রিজ্যা (r): কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত দূরত্ব
  • ব্যাস (d): পরস্পর বিপরীত দুই প্রান্ত যুক্ত রেখা, যা কেন্দ্র অতিক্রম করে (d = 2r)
  • পরিধি: বৃত্তের বাইরের সীমারেখা

π (পাই) কী?

π = 3.1416 (প্রায়)
π হচ্ছে একটি ধ্রুবক, যা বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত:

π = পরিধি ÷ ব্যাস

এছাড়াও π কে ভগ্নাংশে ২২/৭ ধরাও যায় গণনার সহজতার জন্য।


বৃত্ত সংক্রান্ত সূত্র:

  • পরিধি (C) = 2πr
  • ব্যাসার্ধ (r) = C ÷ 2π
  • ব্যাস (d) = 2r
  • ক্ষেত্রফল (A) = πr²

উদাহরণ:

১। একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধ ৭ সেমি হলে:

  • পরিধি = 2 × π × ৭ = ৪৪ সেমি (প্রায়)
  • ক্ষেত্রফল = π × ৭² = ১৫৪ বর্গসেমি

বাস্তব জীবনে প্রয়োগ:

  • চাকার ব্যাস ও পরিধি নির্ধারণে
  • বৃত্তাকার পার্কের পরিধি ও এলাকা নিরূপণে
  • দড়ির দৈর্ঘ্য বা তার প্রয়োজনীয়তা হিসাব করতে

চিত্র:

নীচে একটি সাধারণ বৃত্তের চিত্র দেওয়া হলো:

উপসংহার:

π ও বৃত্ত সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে জ্যামিতির অনেক অধ্যায় সহজ হয়ে যায়। এটি শুধু পরীক্ষার জন্য নয়, বাস্তব জীবনের অনেক হিসাব-নিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ।


লাভ ও ক্ষতির সহজ সূত্র ও উদাহরণ

লাভ ও ক্ষতি – সূত্র, উদাহরণ ও পার্থক্য

লাভ (Profit): যখন কোন পণ্যের বিক্রয় মূল্য ক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি হয়, তখন লাভ হয়।

ক্ষতি (Loss): যখন বিক্রয় মূল্য ক্রয় মূল্যের চেয়ে কম হয়, তখন ক্ষতি হয়।


মূল সূত্রসমূহ:

  • লাভ = বিক্রয় মূল্য – ক্রয় মূল্য
  • ক্ষতি = ক্রয় মূল্য – বিক্রয় মূল্য
  • লাভ % = (লাভ × ১০০) ÷ ক্রয় মূল্য
  • ক্ষতি % = (ক্ষতি × ১০০) ÷ ক্রয় মূল্য
  • বিক্রয় মূল্য = ক্রয় মূল্য + লাভ
  • বিক্রয় মূল্য = ক্রয় মূল্য – ক্ষতি

উদাহরণ ১:

একটি বই ২০০ টাকায় ক্রয় করে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হলো।

⇒ লাভ = ২৫০ − ২০০ = ৫০ টাকা

⇒ লাভ % = (৫০ × ১০০) ÷ ২০০ = ২৫%

উদাহরণ ২:

একটি মোবাইল ৫০০০ টাকায় ক্রয় করে ৪৮০০ টাকায় বিক্রি করা হলো।

⇒ ক্ষতি = ৫০০০ − ৪৮০০ = ২০০ টাকা

⇒ ক্ষতি % = (২০০ × ১০০) ÷ ৫০০০ = ৪%


লাভ ও ক্ষতির মধ্যে পার্থক্য:

বিষয় লাভ ক্ষতি
সম্পর্ক বিক্রয় মূল্য > ক্রয় মূল্য বিক্রয় মূল্য < ক্রয় মূল্য
আবেগ সন্তুষ্টি ক্ষোভ
অর্থনৈতিক অবস্থা লাভজনক ক্ষতিসাধন

উপসংহার:

লাভ ও ক্ষতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশ এবং পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূত্রগুলো অনুশীলন করলে সহজেই এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায়।

সরল ও চক্রবৃদ্ধি সুদের পার্থক্য কী?

সরল সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদ – সূত্র, উদাহরণ ও পার্থক্য

১. সরল সুদ (Simple Interest):

যে সুদ নির্দিষ্ট মূলধনের উপর নির্দিষ্ট হারে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধারাবাহিকভাবে হিসাব করা হয়, তাকে সরল সুদ বলে।

সরল সুদের সূত্র:

সরল সুদ (SI) = (মূলধন × হার × সময়) ÷ ১০০

উদাহরণ:

৳৫০০০ মূলধন ২ বছরের জন্য ৫% হারে ধার দিলে, সুদ কত?

⇒ SI = (৫০০০ × ৫ × ২) ÷ ১০০ = ৳৫০০


২. চক্রবৃদ্ধি সুদ (Compound Interest):

যেখানে সুদ পরবর্তী সময়ে মূলধনের সাথে যুক্ত হয়ে নতুন মূলধন গঠন করে, এবং তার উপর আবার সুদ হিসাব করা হয়, তাকে চক্রবৃদ্ধি সুদ বলে।

চক্রবৃদ্ধি সুদের সূত্র:

চক্রবৃদ্ধি সুদ (CI) = মূলধন × {(১ + r/100)n – ১}

যেখানে,
r = বার্ষিক হার (%)
n = সময় (বছর)

উদাহরণ:

৳১০০০০ দুই বছরের জন্য ১০% হারে সুদ দিলে, চক্রবৃদ্ধি সুদ কত?

⇒ CI = ১০০০০ × {(১ + ১০/১০০)² − ১} = ১০০০০ × (১.২১ − ১) = ৳২১০০


৩. পার্থক্য:

বিষয় সরল সুদ চক্রবৃদ্ধি সুদ
মূলধন স্থির থাকে সুদের সাথে বেড়ে যায়
সুদের হিসাব শুধু মূলধনের উপর মূলধন + আগের সুদের উপর
গাণিতিক মান কম বেশি

উপসংহার:

সরল ও চক্রবৃদ্ধি সুদ প্রতিদিনের আর্থিক লেনদেনে গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই সুদের পার্থক্য বুঝলে ব্যাংকিং, বীমা, ঋণ গ্রহণ ইত্যাদিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

গ.সা.গু ও ল.সা.গু কিভাবে নির্ণয় করবেন?

গ.সা.গু ও ল.সা.গু – সহজ ব্যাখ্যা, সূত্র ও উদাহরণ

গ.সা.গু (গরিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক):

গ.সা.গু হল এমন একটি বৃহত্তম সংখ্যা যা দুটি বা ততোধিক সংখ্যাকে নিঃশেষে ভাগ করতে পারে।

উদাহরণ:

ধরা যাক: ১২ এবং ১৮ এর গ.সা.গু নির্ণয় করতে হবে।

  • ১২ এর গুণিতক: ১, ২, ৩, ৪, ৬, ১২
  • ১৮ এর গুণিতক: ১, ২, ৩, ৬, ৯, ১৮

সাধারণ গুণিতক: ১, ২, ৩, ৬ → গ.সা.গু = ৬


ল.সা.গু (লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক):

ল.সা.গু হল এমন একটি ক্ষুদ্রতম সংখ্যা যা দুটি বা ততোধিক সংখ্যার গুণিতক এবং তাদের দ্বারা বিভাজ্য।

উদাহরণ:

ধরা যাক: ৪ এবং ৬ এর ল.সা.গু নির্ণয় করতে হবে।

  • ৪ এর গুণিতক: ৪, ৮, ১২, ১৬, ২০, ২৪…
  • ৬ এর গুণিতক: ৬, ১২, ১৮, ২৪…

সাধারণ গুণিতক: ১২, ২৪… → ল.সা.গু = ১২


গ.সা.গু ও ল.সা.গু নির্ণয়ের নিয়ম:

  1. গুণিতক পদ্ধতি
  2. ভাগ পদ্ধতি
  3. প্রাথমিক গুণনীয়ক বিশ্লেষণ পদ্ধতি

গ.সা.গু ও ল.সা.গু – গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক:

দুটি সংখ্যার গ.সা.গু × ল.সা.গু = সংখ্যাদ্বয়ের গুণফল

যেমন: ৮ ও ১২ এর গ.সা.গু = ৪, ল.সা.গু = ২৪
⇒ ৪ × ২৪ = ৯৬ এবং ৮ × ১২ = ৯৬ ✅


উপসংহার:

গ.সা.গু ও ল.সা.গু গণিতের মৌলিক ধারণা, যা বিভিন্ন গণনাতে ব্যবহৃত হয়। এটি বোঝা সহজ ও পরীক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

📌 “পিথাগোরাস থিওরেম ও লগারিদম – সূত্র, উদাহরণ ও সহজ ব্যাখ্যা” 📌 “Logarithm ও Right-Angled Triangle – সূত্র ও বাংলা উদাহরণ

পিথাগোরাস উপপাদ্য ও লগারিদম – সূত্র ও সহজ উদাহরণ

১. পিথাগোরাস উপপাদ্য:

ত্রিভুজ যদি একটি সমকোণী ত্রিভুজ হয় (যেখানে একটি কোণ ৯০°), তবে বাহুগুলোর মধ্যে সম্পর্ক হবে:

অতিভুজ² = ভূমি² + লম্ব²

এটি পিথাগোরাস উপপাদ্য নামে পরিচিত।

উদাহরণ:

একটি ত্রিভুজে ভূমি = ৩ একক, লম্ব = ৪ একক। অতিভুজ কত?

⇒ অতিভুজ² = ৩² + ৪² = ৯ + ১৬ = ২৫

⇒ অতিভুজ = √২৫ = ৫ একক


২. লগারিদম (Logarithm):

যদি ax = b হয়, তবে logab = x হয়।

লগারিদমের প্রধান নিয়মাবলী:

  • loga(mn) = logam + logan
  • loga(m/n) = logam − logan
  • loga(mr) = r·logam

উদাহরণ:

ধরুন: log10100 = ?

কারণ: 102 = 100, সুতরাং log10100 = 2


চিত্র: সমকোণী ত্রিভুজ


উপসংহার:

পিথাগোরাস উপপাদ্য জ্যামিতির অন্যতম মূল ভিত্তি, এবং লগারিদম অঙ্কের জটিল গাণিতিক হিসাব সহজ করতে সাহায্য করে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এই দুটি অধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনুপাত, শতকরা ও সরল সুদ – সহজ ব্যাখ্যা ও উদাহরণসহ

অনুপাত, শতকরা ও সরল সুদ – সহজ ব্যাখ্যা ও উদাহরণ

অনুপাত (Ratio): দুটি বা ততোধিক সংখ্যার তুলনাকে অনুপাত বলা হয়। ধরুন, একটি ক্লাসে ছেলে ও মেয়ের সংখ্যা যথাক্রমে 10 ও 15, তাহলে তাদের অনুপাত হবে 10:15 অর্থাৎ 2:3।

অনুপাত নির্ণয়ের সূত্র:

  • অনুপাত = প্রথম সংখ্যা ÷ দ্বিতীয় সংখ্যা
  • যেমন: 20 : 30 = 20 ÷ 30 = 2 : 3

অনুপাতের ব্যবহার:

অনুপাত ব্যবহার করে আমরা মিশ্রণ, ভাগবন্টন, সময় ও দূরত্ব নির্ণয় করতে পারি।


শতকরা (Percentage): শতকরা মানে প্রতি ১০০-এ কত তা বোঝানো। উদাহরণ: পরীক্ষায় ৫০ নম্বরের মধ্যে কেউ ৪০ পেলে তার শতকরা নম্বর = (40/50) × 100 = 80%

শতকরা নির্ণয়ের সূত্র:

  • শতকরা মান = (লাভ বা ক্ষতি / মূল মূল্য) × 100
  • শতকরা নম্বর = (প্রাপ্ত নম্বর / পূর্ণ নম্বর) × 100

সরল সুদ (Simple Interest): একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট হারে অর্থ ধার দিলে যে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়, তাকে সরল সুদ বলে।

সরল সুদের সূত্র:

  • সরল সুদ (SI) = (মূলধন × হার × সময়) ÷ 100
  • যেমন: ১০০০ টাকা ১ বছরে ৫% হারে, সুদ = (1000 × 5 × 1) ÷ 100 = ৫০ টাকা

উদাহরণ:

রাহিম ২ বছরের জন্য ২০০০ টাকা ধার দেয় ৬% হারে। সুদ কত হবে?
উত্তর: SI = (2000 × 6 × 2) ÷ 100 = ২৪০ টাকা

উপসংহার:

অনুপাত, শতকরা ও সরল সুদ গণিতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। পরীক্ষায় সফলতা পেতে হলে এই অধ্যায়গুলোর ভালো অনুশীলন প্রয়োজন।

ত্রিভুজ ও ত্রিভুজ-সংক্রান্ত উপপাদ্য – প্রাথমিক আলোচনা

ত্রিভুজ ও ত্রিভুজ-সংক্রান্ত উপপাদ্য – প্রাথমিক আলোচনা



ভূমিকা:
জ্যামিতিতে ত্রিভুজ হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ আকৃতি। এটি তিনটি বাহু এবং তিনটি কোণ দ্বারা গঠিত একটি বন্ধ আকার। ত্রিভুজ-সংক্রান্ত বিভিন্ন উপপাদ্য ও সূত্র গণিতের জগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ত্রিভুজ কী?

ত্রিভুজ হলো এমন একটি জ্যামিতিক আকৃতি, যার তিনটি বাহু এবং তিনটি কোণ থাকে। তিনটি রেখাংশ একে অপরকে সংযুক্ত করে একটি ত্রিভুজ গঠন করে।

ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্য:

  • ত্রিভুজের বাহুগুলোর যেকোনো দুইটির যোগফল তৃতীয় বাহুর চেয়ে বড় হয়।
  • এর অভ্যন্তরীণ কোণগুলোর সমষ্টি সর্বদা ১৮০° হয়।

ত্রিভুজের প্রকারভেদ

১. বাহুর ভিত্তিতে:

  • সমবাহু ত্রিভুজ: তিনটি বাহু সমান
  • সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ: দুটি বাহু সমান
  • অসামবাহু ত্রিভুজ: তিনটি বাহুই অসমান

২. কোণের ভিত্তিতে:

  • সুষম কোণযুক্ত ত্রিভুজ: সব কোণ ৬০°
  • সমকোণ ত্রিভুজ: একটি কোণ ঠিক ৯০°
  • অধিক কোণযুক্ত ত্রিভুজ: একটি কোণ ৯০°-এর বেশি

ত্রিভুজ সংক্রান্ত উপপাদ্য

১. ত্রিভুজের অভ্যন্তরীণ কোণগুলোর যোগফল:

প্রমাণ: একটি ত্রিভুজের তিনটি কোণের যোগফল সর্বদা ১৮০°।

২. বাহু ও কোণের সম্পর্ক:

ত্রিভুজের বড় কোণের বিপরীতে বড় বাহু এবং ছোট কোণের বিপরীতে ছোট বাহু থাকে।

৩. পিথাগোরাস উপপাদ্য:

"সমকোণ ত্রিভুজে অতিভুজের বর্গ সমান অপর দুই বাহুর বর্গের যোগফল।"
অর্থাৎ, c² = a² + b²

উপসংহার

ত্রিভুজ ও তার উপপাদ্যগুলো জ্যামিতির মূল ভিত্তি গঠনে সহায়তা করে। এসব উপপাদ্য গণিতে সমস্যার সমাধানে ও বিভিন্ন প্রকৌশল কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ট্যাগ: #ত্রিভুজ #জ্যামিতি #উপপাদ্য #গণিত_শিক্ষা #বাংলা_আর্টিকেল

রেখা ও কোণ – প্রাথমিক আলোচনা

রেখা ও কোণ – প্রাথমিক আলোচনা

ভূমিকা:
গণিতের জ্যামিতি শাখায় রেখা ও কোণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি মৌলিক উপাদান। এগুলোর উপর ভালোভাবে ধারণা না থাকলে জ্যামিতির আরও জটিল বিষয় বোঝা সম্ভব নয়। আজকের আলোচনায় আমরা রেখা ও কোণের প্রাথমিক ধারণা নিয়ে বিস্তারিত জানব।

রেখা (Line) কী?

রেখা হলো বিন্দুর সরল সারি যা দুইদিকে অসীমভাবে বিস্তৃত। রেখার কোনো শুরু বা শেষ নেই।

রেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ:

  • এটি সরল হয়।
  • দুটি বিপরীত দিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।
  • এটি সাধারণত দুটি বড় অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়, যেমন: AB̅।

রেখার প্রকারভেদ:

  1. রশ্মি (Ray): একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে শুরু হয়ে একদিকে অসীম পর্যন্ত যায়। উদাহরণ: OA⃗
  2. রেখাংশ (Line Segment): দুটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখা। উদাহরণ: AB

কোণ (Angle) কী?

কোণ হলো দুটি রশ্মি বা রেখা একটি সাধারণ বিন্দুতে মিলিত হলে তাদের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা বা ব্যবধান। যে বিন্দুতে রশ্মি দুটি মিলিত হয় তাকে বলা হয় শীর্ষবিন্দু এবং রশ্মি দুটিকে বলা হয় বাহু

কোণের গঠন:

যখন দুটি রেখা বা রশ্মি একটি বিন্দুতে মিলিত হয়, তখন তাদের মাঝে একটি কোণ গঠিত হয়। উদাহরণ: ∠ABC (B হচ্ছে শীর্ষবিন্দু)।

কোণের প্রকারভেদ:

  • সুষম কোণ (Acute Angle): ০° থেকে ৯০° এর মধ্যে
  • সমকোণ (Right Angle): ঠিক ৯০°
  • অধিক কোণ (Obtuse Angle): ৯০° থেকে ১৮০° এর মধ্যে
  • ঋজু কোণ (Straight Angle): ঠিক ১৮০°
  • পূর্ণ কোণ (Complete Angle): ঠিক ৩৬০°

রেখা ও কোণের ব্যবহার:

রেখা ও কোণের ব্যবহার শুধুমাত্র জ্যামিতিতেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রকৃতি, স্থাপত্য, প্রকৌশল, ডিজাইন এবং গাণিতিক চিন্তাধারায় এর ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে।

উপসংহার:

রেখা ও কোণ সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা থাকলে আমরা জ্যামিতির আরও জটিল ধারণাগুলো সহজে বুঝতে পারি। শিক্ষার্থীদের জন্য এই ভিত্তিগত বিষয়গুলো যত ভালোভাবে আয়ত্ত করা যায়, তত ভালো ফল পাওয়া সম্ভব গণিতে।

ট্যাগ: #রেখা #কোণ #জ্যামিতি #গণিত_শিক্ষা #বাংলা_আর্টিকেল